শেয়ার কি?
শেয়ার ক্রয় পদ্ধতি সাধারণতঃ দুই ধরণের ১।গেঁবুৎসু তরিহিকি বা ক্যাশ ট্রেডিং ২।সিংও তরিহিকি বা ঋণ নিয়ে শেয়ার ক্রয় করা।
১।গেঁবুৎসু তরিহিকি বা একটি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় বলতে কি বুঝায় ?
শেয়ার ট্রেডিং এর গঠন
সস্তায় কিনে চড়া দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করাই শেয়ার ব্যবসার লক্ষ্য।উদাহরণস্বরূপ,যে সমস্ত সংস্থার নতুন পণ্য উন্নয়ন এবং উপার্জন বৃদ্ধির ফলে বিজনেস পারফরমেন্স প্রসারিত হয় সে সমস্ত সংস্থার শেয়ারের দাম বাড়বে।আর সেই সময়সীমার মধ্যে যদি ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রি করা যায় তবে,ক্রয় মূল্য থেকে বিক্রয় মূল্য বাদ দিয়ে বাকিটা লাভ হবে।
উদাহরণ
অন্য দিকে,এটাও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে,শেয়ার যে কোন অপ্রত্যাশিতভাবে হ্রাস পেতে পারে,আর সে সময়ে শেয়ার বিক্রি করিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।আরও মনে রাখতে হবে যে,শেয়ার ইনভেস্টমেন্টের সুবিধাগুলি বাড়ানোর জন্য,কোম্পানির পারফরম্যান্স এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্যতাগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝা গুরুত্বপূর্ণ।
সিংও তরিহিকি কি ?
কেন সিংও তরিহিকি?
শুধু মাত্র নগদ অর্থের গন্ডির মধ্যে শেয়ার লেনদেনর সীমাবদ্ধ থাকলে,আপনি যদি একটি শেয়ার কিনতে চান তবে যদি আপনার কাছে টাকা না থাকে তবে আপনি এটি কিনতে পারবেন না,অথবা যদি আপনি আগে থেকেই শেয়ার সার্টিফিকেট এর মালিক না হন তবে আপনি এটি বিক্রিও করতে পারবেন না।এমতবস্থায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণ সীমিত হওয়ায় সরবরাহ এবং চাহিদার পক্ষপাতের কারণে সামান্য লেনদেনে ই শেয়ার মূল্য অপ্রত্যাশিতভাবে উঠানামা করার ঝুঁকি থাকতে পারে,আর এই জন্যই সিংও তরিহিকি চালু করা হয়েছে।এই সিস্টেমের মাধ্যমে,নিজস্ব পুঁজি অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট(ক্রয়কৃত শেয়ার/খাৰুকেন)বন্ধক রেখে শেয়ার লেনদেন সম্ভব। বিধায় বাইবাইদাকা,চাহিদা ও যোগান বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে ন্যায্য মূল্য গঠন উন্নীত করে।
সিংও ক্রয় এবং বিক্রয় কিভাবে করবো!
সিংও ক্রয় বা কাইদাতে
নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে ঋণ হিসেবে ৩.৩গুণ শেয়ার ক্রয় পদ্ধতিকে সিংও ক্রয় বা কাইদাতে বলে।এবংএই পদ্ধতি অবলম্বন করে ক্রয়কৃত শেয়ার সার্টিফিকেটকে কাইতাতেগ্যায়উকু বলে।
কাইতাতেগ্যায়উকু পরিশোধের উপায়
কাইতাতেগ্যায়উকু পরিশোধের দুটি উপায়,নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
1. কাইতাতেগ্যায়উকু প্রধানতঃশে য়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
বিক্রয় মূল্য থেকে গ্রহণকৃত ঋণ,কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যাহা অবশিষ্ট থাকিবে তাহা বিনিয়োগকারীর মুনাফা বা ক্ষতি হবে।
- বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ পৃথকভাবে আদায় করা হবে।
2.কাইতাতেগ্যায়উকু এর সমপরিমাণ নগদ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হলে, তারপর ঋণদাতা থেকে বিনিয়োগকারীর নিকট শেয়ার সার্টিফিকেট ফেরৎ আনতে সক্ষম হন।
এই পদ্ধতিকে গেনবিকি বা সিনাউকে বলে।
সিংও বিক্রয় বা উড়িতাতে
নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে ঋণ হিসেবে ৩.৩গুণ বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট ধার করে তাহা শেয়ার বাজারে বিক্রি করাকে সিংও বিক্রয় বা উড়িতাতে বলে।এবং এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ধার করা শেয়ার সার্টিফিকেটকে উড়িতাতেগ্যায়উকু বলে।
1.ধার করা বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট বা উড়িতাতেগ্যকু,প্ রধানতঃশেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ধার পরিশোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
ক্রয় মূল্য থেকে ধার করা বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট এর মূল্য ,কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যাহা অবশিষ্ট থাকিবে তাহা বিনিয়োগকারীর মুনাফা বা ক্ষতি হবে।
- বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কমিশন,সুদের অংশ এবং বিভিন্ন খরচ পৃথকভাবে আদায় করা হবে।
2.উড়িতাতেগ্যায়উকু এর সমপরিমাণ বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট ফেরৎ দিয়ে, তারপর ঋণদাতা থেকে বিনিয়োগকারীর নগদ সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।
এই পদ্ধতিকে গেঁনওয়াতাসি বা সিনাওয়াতাসি বলে।
সিংও-জানদাকা কি এবং ভবিষ্যতের শেয়ার মূল্যের উপর তার প্রভাব?
সিংও-জানদাকা হচ্ছে,সিংও তরিহিকির অবশিষ্ট অপরিশোধিত ঋণ বা ধারকে বলা হয়।সিংও জানদাকা দুই ধরণের হয় (১)সিংওকাই জানদাকা বা কাইজান এবং(২)সিংওউড়ি জানদাকা বা উড়িজান।(১)সিংওকাই জানদাকা হচ্ছে,নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে(বন্ধক)অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে"শেয়ার"ক্রয় করেছেন অথচ এখনোও শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ না করাতে অবশিষ্ট অবস্থায় রয়ে গেছে এবং ঐ অবিক্রিত অবশিষ্ট শেয়ার গুলিকে সিংওকাই জানদাকা বলে।
(২)আর সিংওউড়ি জানদাকা হচ্ছে তার বিপরীত,নগদ অর্থ অথবা শেয়ার সার্টিফিকেট বন্ধক হিসেবে সিকিউরিটিজ কোম্পানির নিকট জমা রেখে(বন্ধক)অতঃপর সিকিউরিটিজ কোম্পানি থেকে"বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট"ধার করেছেন অথচ এখনোও তাহা ক্রয় না করায় অবশিষ্ট রয়ে গেছে এবং ঐ অবশিষ্ট "বিক্রিত শেয়ার সার্টিফিকেট"গুলিকে সিংওউড়ি জানদাকা বলে।
সিংও তরিহিকি সেবা একবার গ্রহণ করলে অবশ্যই তাহা ৬মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা বাধ্যতামুলক।
"বর্তমান সময়ের সিংওকাই জানদাকা ভবিষ্যতে বিক্রয় পরিণতি
বিপরীতভাবে,সিংওউড়ি জানদাকার(কারাউড়ি)স্ফীতির হার যত বাড়বে ততই ভবিষ্যতে ক্রয় চাপ বৃদ্ধি পাবে,ফলে শেয়ার মূল্য পতন রোধ সহায়তায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করায় ভবিষ্যতের মূল্য বৃদ্ধির পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।"
সিংওবাইরিত্সু কি?
থাইসাকু বাইরিত্সু হচ্ছে সিংও তরিহিকি লেনদেনের পরিস্থিতি দেখানোর জন্য একটি সূচক।সিংও তরিহিকি সেবা গ্রহীতাদের কাই-জানদাকার (ক্রয় অবশিষ্ট)বিপরীতে উড়ি-জানদাকার( বিক্রয় অবশিষ্ট)অনুপাত,এর অর্থ দাঁড়ায় কাই-জানদাকা÷উড়ি-জানদা কা=এর গণনা ফল ১গুন এর বেশি হলে সিংওকাই বিনিয়োগকারী অধিক,আর যদি ১গুন এর কম হয় তবে সিংওউড়ি বিনিয়োগকারী অধিক।এটাকে আবার,কখনও সিংওবাইরিত্সু বলে অভিহিত করা হয়।তবে থাইসাকু বাইরিত্সু এবং সিংওবাইরিত্সু একই অর্থ প্রকাশ করে।কোনো কোনো ক্ষেত্রে থাইসাকু-হিড়িৎসু বা সিংও-হিড়িৎসু ও বলা হয়।
"সিংওবাইরিত্সু হ্রাস পায়,এর মানে হল যে সিংওকাই জানদাকা হ্রাস পেয়েছে,তাই এটি মনে করা হয় যে ভবিষ্যতের দর পতনের ঝুঁকিও হ্রাস পেয়েছে এবং ক্রয়ের সুযোগ হিসেবে গণ্য করা হয়। "
জুনশিছান বা নিট সম্পদ কি?
নিট সম্পদ/Net worth / জুনশিছান এর বিশুদ্ধ সংজ্ঞা হচ্ছে নিজস্ব সম্পদ অতএব,শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা পুঁজি এবং ব্যবসা করে আয় করা মোট সম্পদকে জুনশিছান বা নিট সম্পদ বলা হয়।
ফুছাই/দায়দেনা/Liability কি ?
ফুছাই হচ্ছে একটি কোম্পানির ঋণ এবং ঋণাত্মক সম্পত্তিকে বুঝায়।যেমনঃ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ,ক্রয়কৃত পণ্যের মূল্য যাহা এখনও পরিশোধ করা হয়নি অথবা পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইত্যাদি কে ফুছাই/দায়দেনা/Liability বলে। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ঋণ,বাকিতে কেনা পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা হয়নি,ভবিষ্যতে সম্পদ হ্রাস পাবে ইত্যাদি ফুছাই এর অন্তর্ভুক্ত।
জুনরিএয়কি বা বিশুদ্ধ মুনাফা/নিট আয় কি?
জুনরিএয়কি হচ্ছে একটি কোম্পানির সমস্ত খরচ, কর, ইত্যাদি সম্পূর্ণ প্রদানের পর অবশিষ্ট মুনাফাকে বলা হয়। এটা কোম্পানির লাভজনকতা এবং কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অবস্থা বোঝার একটি সূচক।
মোট সম্পদ এবং নিট সম্পদের মধ্যে পার্থক্য
জুনশিছান বা নিট সম্পদ হচ্ছে নিজস্ব সম্পদ আর মোট সম্পদ হচ্ছে ফুছাই এবংজুনশিছান এর সমষ্টি।
জুনশিছান=মোট সম্পদ-ফুছাই
মোট সম্পদ=ফুছাই+জুনশিছান
বাজার মূলধন/ জিকা ছোওগাকু/Market capitalization কি ?
জিকা ছোওগাকু বা বাজার মূলধন হচ্ছে বর্তমান শেয়ার মূল্য × কোম্পানির ইস্যুকৃত সকল শেয়ার। এর অর্থ এই দাঁড়ায় গোটা কোম্পানির মূল্য।
BPS(Book-value Per Share)/ইস্তও খাবু-অতারিজুনশিসন কি ?
Book-value Per Shareএর সংক্ষিপ্ত নাম BPS বা শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ।এটি কোম্পানির স্থিতিশীলতার জন্য একটি নির্দেশক।
গণনা পদ্ধতি
BPS=জুনশিছান➗ইস্যুকৃত শেয়ারের সংখ্যা
BPS যত উচ্চ হবে ঐ কোম্পানির স্থিতিশীলতা ততই উচ্চতর বলে বিবেচিত হবে।
খাবুকা জুনশিছান বাইরিৎসু /(Price Book-value Ratio)PBRকি ?
খাবুকা জুনশিছান বাইরিৎসু হচ্ছে Price Book-value Ratio বা এর সংক্ষিপ্ত নাম PBR হিসাবে অভিহিত করা হয়।এটি একটি কোম্পানির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য সূচক।শেয়ার প্রতি নেট সম্পদের তুলনায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীরা কতগুণ শেয়ার কিনেছে তাহা বোঝার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি সূচক।এই সূচকের ক্ষেত্রে কোম্পানির নিজস্ব সম্পদ পরিমান শেয়ার বাদ দিয়ে বাকি যে শেয়ার গুলো বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ার গুলোকে বুঝানো হয়েছে ।
খাবুকা শুওইকি-রিৎসু/(Price Earnings Ratio)PER কি?
কোম্পানির মুনাফা এবং শেয়ার মূল্যের মধ্যে সম্পর্ক তুলনা করে বর্তমানে একটি শেয়ার মূল্য তুলনামূলক সস্তা বা তুলনামূলক চড়া কিনা তাহা বোঝার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি সূচক।
এই সূচক ব্যবহার করে একটি কোম্পানির বর্তমান শেয়ার মূল্যের সাথে লাভজনকতা তুলনা করে শেয়ার বিনিয়োগ মান বিচার করা সম্ভব।সাধারনতঃPER যত কমবে ততই কোম্পানির মুনাফা অর্জনের বিপরীতে শেয়ার মূল্য তুলনামূলক সস্তা বলে বিবেচিত হবে। অপর দিকে,PER যত বাড়বে কোম্পানির মুনাফা অর্জনের বিপরীতে শেয়ার মূল্য ততই তুলনামূলক চড়া বলে বিবেচিত হবে।
গণনা সূত্র নিম্নরূপ হিসাব করা হয়
PER(খাবুকা শুওইকি-রিৎসু)=জিকা সোগাকু➗জুনরিএয়কি
PER বের করার গাণিতিক নিয়ম হচ্ছে জিকা সোগাকু ➗ জুনরিএয়কি= PER। একটি শেয়ারের পরিপ্রেক্ষিতে,শেয়ার প্রতি নেট লাভের কতগুণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয় করেছে এর দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে।
উপরের চিত্র অনুযায়ী,যদি PER ১০গুণ হয়,তবে বলা হয় যে এটি মোট লাভের ১০ গুণ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয় করেছেন।
তবে বুঝতে হবে ওই কোম্পানির শেয়ার কিনে লভ্যাংশ প্রাপ্তির মাধ্যমে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসতে ১০ বছর সময় লাগবে। এ এক্ষেত্রে কোম্পানির আয় অপরিবর্তনীয় থাকতে হবে। সাধারণত PER ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে থাকা পর্যন্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা নিরাপদ ধরা হয়। কিন্তু এর চেয়ে বেশি হলে বিনিয়োগে ভাবতে হবে। কারণ PER যত বেশি হবে ঝুঁকিও তত বেশি হবে। তবে যদি কোম্পানির আয় সামনে বাড়ার সম্ভাবনা থাকে তবে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। কারণ সেক্ষেত্রে আয় বাড়ার পর PER কমে যাবে। তাছাড়া PER কম হলেও যদি সামনে কোনো কোম্পানির আয় কমে যাওয়ার কারণ থাকে তবে ওই কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।
No comments :
Post a Comment